প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা সকলের জন্য উপযোগী নয়। অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন কারণে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় মানিয়ে নিতে পারে না। তাদের জন্য বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা কি?
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা হলো প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে শিক্ষা অর্জনের বিভিন্ন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব আগ্রহ, শেখা-শোনার ধরন এবং চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার ধরণ:
- গৃহশিক্ষা: গৃহশিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন।
- স্ব-শিক্ষা: নিজের প্রচেষ্টায় শিক্ষা অর্জন।
- অনলাইন শিক্ষা: ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন।
- বিকল্প বিদ্যালয়: প্রচলিত স্কুলের বাইরে বিভিন্ন বিকল্প বিদ্যালয়, যেমন – মন্টেসরি স্কুল, ওয়ালডর্ফ স্কুল ইত্যাদিতে শিক্ষা অর্জন।
- কারিগরি শিক্ষা: বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা অর্জন।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা:
- শিক্ষার্থীদের নিজস্ব আগ্রহ অনুযায়ী শিক্ষা অর্জনের সুযোগ।
- শিক্ষার্থীদের নিজস্ব শেখা-শোনার ধরন অনুযায়ী শিক্ষাদানের ব্যবস্থা।
- আরও বেশি নমনীয়তা এবং স্বাধীনতা।
- প্রচলিত স্কুলের চেয়ে কম খরচে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার অসুবিধা:
- সকলের জন্য উপযোগী নয়।
- মানসম্পন্ন শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের অভাব।
- সরকারি স্বীকৃতি না থাকায় চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা কাদের জন্য উপযোগী?
- যারা প্রচলিত স্কুলের পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে না।
- যাদের বিশেষ চাহিদা রয়েছে, যেমন – অটিজম, ডিজলেক্সিয়া ইত্যাদি।
- যারা ক্রীড়া, সঙ্গীত, শিল্পকলা ইত্যাদিতে পেশাদার হতে চায়।
- যারা দ্রুত শিক্ষা অর্জন করতে চায়।
বাংলাদেশে বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা:
বাংলাদেশে বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও তার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সরকারিভাবে বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থার বিকাশে তেমন উদ্যোগ নেই। তবে বেসরকারিভাবে কিছু বিকল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি এই বিকল্প ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের তাদের নিজের মেধা ও আগ্রহ অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকল্প শিক্ষা পদ্ধতি আরও ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে মানসম্পন্ন শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সরকারি স্বীকৃতির মাধ্যমে এই পদ্ধতি আরও গতিশীল করতে হবে। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে সফলতা লাভ করতে পারবে।